ফের বিতর্কে বর্ধমান পৌর উচ্চ বিদ্যালয়, কম্পিউটার শিক্ষার নামে অনৈতিকতার অভিযোগ জেলাশাসকের কাছে

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: ফের বিতর্কের মুখে বর্ধমান জেলার নামী স্কুল বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল বয়েজ স্কুলের পরিচালন কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার স্কুলের মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিভাগের একাধিক শিক্ষক জেলাশাসকের কাছে স্কুলের অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানালেন। এই ঘটনায় নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্কুলের ওই শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, ওয়েবেলের নামে সরাসরি বিল ছাপিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কম্পিউটার শিক্ষার নামে অভিভাবকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে অর্থ আদায় করা হচ্ছে কিন্তু তার কোনো যথাযথ হিসাব তাঁরা জানতে পারছেন না। 

বিজ্ঞাপন
শুক্রবার জেলাশাসককে দেওয়া অভিযোগে স্কুলের মাধ্যমিক বিভাগের ৪জন এবং প্রাথমিক বিভাগের ৩জন শিক্ষক স্বাক্ষর করেছেন। শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, ২০০০ সাল নাগাদ রাজ্য সরকার কম্পিউটার শিক্ষা কর্মসূচি চালু করেন ১০০টি সরকারী ও সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ে। যার মধ‌্যে এই স্কুলও অন্তর্ভুক্ত হয়। ওয়েবেল সংস্থা এই দায়িত্ব পায় এবং তাঁরা এই স্কুল ২জন কম্পিউটার শিক্ষকও নিযুক্ত করেন। পরবর্তীকালে ওয়েবেলের ওই দু শিক্ষক অন্যত্র চলে যান। স্কুল নিজের উদ্যোগে ২জন শিক্ষক নিয়োগ করে প্রকল্প চালু রাখেন। 
এই শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, ইতিমধ্যে সরকার আইসিটি প্রকল্প অনুমোদন করলেও এই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ না করে আগের মতই ছাত্রদের কাছ থেকে এব্যাপারে অর্থ নিতে থাকে। এই শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন, ২০১২ সালে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, এই স্কুল কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়ে ওয়েবেলের সঙ্গে চুক্তি করেছে এবং তারাই এই প্রকল্প চালাবে। যদিও এই অভিযোগকারী শিক্ষকদের দাবী, সেই চুক্তিপত্র এখনও প্রকাশ্যে আনা হয়নি। শিক্ষকদের অভিযোগ, বিদ্যালয় ওয়েবেলের নামে বিল ছাপিয়ে যে অর্থ সংগ্রহ করে চলেছে সেখানে স্কুলের কোনো নাম নেই। এমনকি যে শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছে তাঁদের নিয়োগপত্র ও বেতন নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরী হয়েছে। 
এই অভিযোগকারী শিক্ষকদের দাবী, ওই শিক্ষকদের চেকের মাধ্যমে যে যৎসামান্য বেতন দেওয়া হয় ২০২০ সালের মার্চ মাসের আগে পর্যন্ত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর থাকত। শিক্ষকদের দাবী, স্কুলে প্রায় ২০০০ ছাত্র রয়েছে। তাদের কাছ থেকে গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ৬৫০টাকা করে আদায় করা হয়। বিপুল পরিমাণ এই অর্থ ব্যাঙ্ক ড্রাফটের মাধ্যমে ওয়েবেল সংস্থাকে দেওয়া হয় বলা হচ্ছে। আদপেই তা হচ্ছে কিনা, বা এব্যাপারে কোনো অনৈতিক বিষয় ঘটছে কিনা – সে ব্যাপারে জেলাশাসকের কাছে তদন্তের আবেদন জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য কিছুদিন আগেই স্কুলের প্রাচীন গাছ অদৃশ্য কারণে মরে যাওয়া কে কেন্দ্র করে হুলুস্থুল হয়েছিল। আর এবার এই ঘটনায় বর্ধমানের নামী এই স্কুল নিয়ে ফের বিতর্ক দানা বেধেছে। যদিও এব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আরো পড়ুন