বর্ধমানে কবে, কোন মেলা বা উৎসব হতে চলেছে এবং কোনগুলো হচ্ছে না – জেনে নিন

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: করোনার বাড়বাড়ন্তে পূর্ব বর্ধমান জেলায় রাজ্যস্তরের নির্দেশিকার পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের জারী করা নির্দেশে রীতিমত মন খারাপ ছিল জেলার মেলা ও উৎসব আয়োজনকারীদের। কিন্তু শনিবার রাজ্য সরকারের শর্ত সাপেক্ষে মেলা করার অনুমতি দেবার পরই ফের কোমড় বাঁধছেন উদ্যোক্তারা। প্রতিবছরই শীতের শুরু থেকেই গোটা জেলা জুড়ে অসংখ্য মেলা ও উৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে। কোথাও কোথাও সরকারী উদ্যোগে আবার কোথাও ব্যক্তিগত উদ্যোগে আয়োজন করা হয়ে থাকে এই সব মেলার।

বিজ্ঞাপন

 খোদ বর্ধমান শহর ও শহরকেন্দ্রিক আশপাশ এলাকায় গত কয়েকবছর ধরে একের পর এক তৃণমূল নেতার হাত ধরে মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এবারে করোনা পরিস্থিতির জেরে উদ্যোক্তারা অনেকেই মেলার প্রস্তুতি নিলেও সরকারী নির্দেশে তা স্থগিত রাখেন। কিন্তু শনিবারের ঘোষণার পর ফের নতুন উদ্যমে মেলার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন কেউ কেউ।

 ১৬ থেকে ২৩ জানুয়ারী বর্ধমান টাউন হলে এবছর মাঘ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু করোনার জন্য নির্দিষ্ট দিনে এই মাঘ উৎসব আয়োজন করতে পারেনি মেলা কমিটির সভাপতি বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলার পরেশ সরকার। তিনি জানিয়েছেন, নতুন করে মেলা করার অনুমতি দেওয়ার পর তাঁরা ফের ভাবনা চিন্তা শুরু করে দিয়েছেন। তবে টাউন হল ফাঁকা পাওয়ার পরই এব্যাপারে নতুন করে তাঁরা ঘোষণা করবেন। তিনি জানিয়েছেন, সোমবার পুরসভার সঙ্গে আলোচনার পরই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন। 

গত কয়েকবছর ধরে আর এক তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন কাউন্সিলার প্রদীপ রহমানের উদ্যোগে আয়োজিত হচ্ছে বাঁকা উৎসব। তিনিও জানিয়েছেন, এব্যাপারে পুরসভার সঙ্গে তাঁরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। এরই পাশাপাশি এবছর ২২-৩০ জানুয়ারী বর্ধমান পুরসভার উদ্যোগে বর্ধমান উৎসব হবার কথা ছিল। করোনার জন্য ৫ জানুয়ারী তা স্থগিত ঘোষণা করা হয়। বর্ধমান পুরসভার উপ পুর প্রশাসক আইনুল হক জানিয়েছেন, মেলা করার বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আলোচনায় বসতে চলেছেন। তারপরই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। 

অন্যদিকে, কয়েকবছর ধরে পুরসভার ১১নং ওয়ার্ডে হচ্ছে বিধান উৎসব। তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ উত্তম সেনগুপ্তের পৃষ্ঠপোষকতায় এই উৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে। যদিও এবার এই উৎসবের আয়োজন করা হবে কিনা তা  নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেই উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। একইভাবে বর্ধমান শহরের গত কয়েকবছর ধরে নজর কাড়ছে কাঞ্চন উৎসব। এবছর ২ ফেব্রুয়ারী থেকে হবার কথা ছিল। প্রাক্তন কাউন্সিলার তথা বর্তমানে বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস জানিয়েছেন, কাঞ্চন উৎসব এবারে হবে না। কারণ করোনার জেরে এই বিশাল উৎসবে জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। 

তিনি জানিয়েছেন, কাঞ্চন উৎসবের অন্যতম আকর্ষণই থাকে মুম্বাইয়ের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। এবারে করোনার জেরে তাঁরা কেউই আসতে পারবে না। তাই এবারে বাতিল করা হয়েছে কাঞ্চন উৎসব। যদিও তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমানের কৃষ্ণসায়র পার্কে ফুলমেলা যা হবার কথা ছিল ১২ জানুয়ারী। তা করোনার জন্য স্থগিত করা হলেও নতুন নির্দেশিকা অনুসারে তাঁরা আগামী ২৩ জানুয়ারী থেকে ৩১ জানুয়ারী সমস্ত কোভিড বিধি মেনে করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুসারে এবারে বাজেপ্রতাপপুরের পৌষালী মেলা বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেলা কমিটির সম্পাদক নুরুল আলম ওরফে সাহেব। 

তিনি জানিয়েছেন, অভিষেক বন্দোপাধ্যায় ২ মাস সমস্ত কিছু বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই এবারে পৌষালী মেলাও তাঁরা বন্ধ রেখেছেন। অন্যদিকে, শহর লাগোয়া বর্ধমান উত্তর উৎসবের সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল হাসান জানিয়েছেন, কোভিড বিধি মেনে তাঁরা ফেব্রুয়ারী মাসের শেষের দিকে বর্ধমান উত্তর উৎসব করার চেষ্টা করছেন। বর্ধমানের শক্তিগড় উৎসব কমিটি এদিনই মেলা করার বিষয় নিয়ে বৈঠকে বসছেন বলে জানিয়েছেন, উৎসব কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক লুতুব আলি।

আরো পড়ুন