বর্ধমানে ফের বিরোধী শূন্য পুর বোর্ড গড়ার পথে তৃণমূল, প্রচারে নেই বিরোধীরা

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি ২০০আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসার দম্ভ দেখিয়েছিল। এমনকি তারাই ক্ষমতায় চলে এসেছে এমনই বার্তা মিছিল, মিটিং থেকে দলীয় কর্মসূচিতে সর্বত্র প্রচার করা হয়েছিল। রাজ্য নেতৃত্ব তো ছিলই, একই সাথে দেশের প্রধানমন্ত্রী, সরাষ্ট্র মন্ত্রী সহ সারা ভারতবর্ষ থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঝাঁকে ঝাঁকে প্রায় প্রতিদিন পশ্চিমবঙ্গের ব্লক থেকে জেলায় মাটি কামড়ে পড়েছিলেন রাজ্যের মমতা সরকার কে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে। তবুও শেষমেশ এই রাজ্যে বিজেপির পরিণতি আজ গোটা দেশের কাছে জানা। এরই পাশাপাশি বামফ্রন্টও কার্যত ধুয়ে মুখে সাফ হয়ে গিয়েছিল ২০২১এর বিধানসভা নির্বাচনে। 

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি এই রাজ্যের চারটি পুর নিগমের ভোটেও পযুর্দস্ত হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। বিধাননগর, চন্দননগর শিলিগুড়ি, আসানসোল এই চারটি পুরনিগম দখল করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। আর এবার সামনেই রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার ভোট। রাজ্যের সঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৬টি পুরসভার ভোট আগামী ২৭ ফ্রেব্রুয়ারি। প্রচারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলির প্রার্থীরা হাতে আর মাত্র সাত দিন সময় পাবেন। শাসক তৃণমূল কংগ্রেস বর্ধমানের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচারের অঙ্গ হিসেবে জনসংযোগ থেকে দেওয়াল লিখন, মিছিলের মাধ্যমে যখন প্রচারে ঝড় তুলছে, সেই সময় কার্যত বিরোধী বিজেপি, সিপিএমকে একপ্রকার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলেই শহরবাসীর একাংশ অভিমত প্রকাশ করেছেন। তবে এবারেও রাজ্য নেতাদের মাঝেমধ্যে হাজির করে ইতিমধ্যে দু একটি পদযাত্রা, মিটিং এর আয়োজন করেছে বিজেপির বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলা নেতৃবৃন্দ। কিন্তু ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচনের ভোটে আদৌ কতটা পুরবাসীদের মনে প্রভাব ফেলতে পারবে এই নেতারা তাতে রীতিমত সংশয় প্রকাশ করছেন বর্ধমানবাসী। 

এদিকে গত ৮বছরে বর্ধমান পুর এলাকায় পরিকল্পিত কোনো উন্নয়নই নির্বাচিত তৃণমূল কংগ্রেসের বোর্ড এবং পরবর্তীকালে প্রশাসন পরিচালিত বোর্ড করতে পারেনি বলেই সংবাদ মাধ্যমের কাছে গলা ফাটাচ্ছেন বিজেপি ও সিপিএমের অধিকাংশ প্রার্থী। সেই সমস্ত প্রার্থীরা এও জানিয়েছেন, পুর পরিষেবা পেতে বর্ধমান শহরের ৩৫টি ওয়ার্ডের মানুষকে এতদিন রীতিমত নাকাল হতে হয়েছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে অর্থের বিনিময়েও পরিষেবা আদায় করতে হয়েছে শহরবাসীকে বলে তাঁরা অভিযোগ করছেন। এবার এই অবস্থার পরিবর্তন চেয়েই বর্ধমানের মানুষ গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা রাখবেন বলেই জানিয়েছেন বিরোধী দলের প্রার্থীরা। 

অন্যদিকে বর্ধমান পুরসভার তৃণমূল কংগ্রেসের ৩৫টি ওয়ার্ডের প্রার্থীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সাধারণ মানুষের কাছে বিরোধীদের বলার মতো কিছুই নেই, তাই রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে ভুল তথ্য তুলে ধরে মানুষের সহানুভূতি পাবার চেষ্টা করছে মাত্র। বর্ধমান শহরবাসীরা জানেন, বাম জামানার অবসান ঘটিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কে ক্ষমতায় আনার পর এই শহরের কতটা আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। সাধারণ মানুষকে নিত্য পরিষেবা দেওয়ার কি কি সুযোগ, সুবিধা পৌরসভা সৃষ্টি করেছে। শহরের রাস্তাঘাট থেকে আলো, জঞ্জাল, নিকাশি ব্যবস্থার বিপুল পরিবর্তন করা হয়েছে। 

শহরের সৌন্দর্য্যায়নের লক্ষ্যে একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে কিছু কাজ অবশ্যই বাকি আছে, যেগুলো নতুন পুরবোর্ড গঠন হয়ে গেলেই অতি দ্রুত শেষ করার পরিকল্পনা তৈরি করা আছে। সুতরাং বিরোধীদের এই ধরনের অপপ্রচারে একদমই কর্ণপাত করছেন না বর্ধমানের ৩৫টি ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা। বরং তারা দাবি করছেন, বর্ধমানের মানুষ মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উন্নয়নমুখী একাধিক প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। এবং পেয়ে যাচ্ছেন। আগামীদিনেও আরো বেশি যাতে সুযোগ, সুবিধা পেতে পারেন তার জন্যই বর্ধমানের ৩৫টি ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের জয়ী করে ফের বিরোধী শূন্য পুর বোর্ড গঠন করতে তাদের পাশেই আছেন বর্ধমানের ভোটদাতারা।

আরো পড়ুন