বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর ৭৮তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,রায়না: বীর বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর ৭৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালিত হল মনীষীর নিজের গ্রামের সংগ্রহশালার সামনে। উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা রায়না বিধানসভার বিধায়িকা শম্পা ধাড়া, রায়না ২ ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অনিশা যশ, রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পার্বতী ধারা মালিক,পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সৈয়দ কলিমুদ্দিন, বড়বৈনান গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তরুণ কান্তি ঘোষ সহ বিশিষ্টজনেরা।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানের প্রথমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সভাধিপতি এবং পরে শহীদ পতাকা উত্তোলন করেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। শঙ্খধ্বনির মধ্য দিয়ে উপস্থিত সকলে মহান বিপ্লবীর আবক্ষ মূর্তিতে একের পর এক মাল্যদান করেন। অনুষ্ঠান মঞ্চে বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর জীবনে নিয়ে আলোকপাত করেন উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই রায়না ২ ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক,পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি,পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ, বড়বৈনান গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ অন্যান্যরা বীর বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর জন্ম ভিটায় পর্যবেক্ষণে আসেন। সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বলেন বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর ৭৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হলো। উনি দিল্লিতে গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ কে বোম মেরে হামলা করেছিলেন। পরে ব্রিটিশ পুলিশ ওনাকে গ্রেপ্তার করে। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ১৯১৫ সালে জাপান চলে যান তিনি।

জাপান সরকারের সহযোগিতায় ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা পরাজিত সৈনিকদের নিয়ে উনি তৈরি করেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি। পরে সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ বাহিনী তৈরি করেন। আজাদ হিন্দ বাহিনী তৈরি করার কিছু দিন পর ওনার শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়। তারপর সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে আজাদ হিন্দ বাহিনী পরিচালনার দায়িত্ব দেন ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে। ১৯৪৫ সালে জাপানের টোকিও শহরের উনি মৃত্যুবরণ করেন। জাপানেই তার দেহ সৎকার করা হয়। জাপানের রেনকোজি মন্দিরে আজও ওনার চিতাভস্ম রাখা আছে।

বড়বৈনান গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তরুণ কান্তি ঘোষ বলেন, রাসবিহারী বসুর সংগ্রহশালা তৈরীর জন্য ২০১১-১২ আর্থিক বর্ষে রায়না দুই পঞ্চায়েত সমিতির ডি আই ফান্ড থেকে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। একই সাথে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৫০ হাজার টাকা অনুদান করেছিলেন। ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে সাংসদ ডা: অনুপ কুমার সাহা নিজস্ব সাংসদ তহবিল থেকে সংগ্রহশালা তৈরীর জন্য ১০ লক্ষ টাকা দান করেন। ২০১৮-১৯ সালে রাজ্য পর্যটন দফতর থেকে ৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হয় সংগ্রহশালার উন্নতিকরণের জন্য।

এছাড়াও ২০১৮-১৯ আর্থিক বর্ষেই ২ লক্ষ ৫৬ হাজার ৬২৮ টাকা রাসবিহারী বসুর স্মৃতির উন্নতিকরণ এবং সাজানোর জন্য পর্যটন দফতর থেকে দেওয়া হয়েছিল। একইভাবে ২০১৮-১৯ আর্থিক বর্ষে রাসবিহারী বসুর বাস্তুভিটা সংরক্ষণের জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পর্যটন দফতর থেকে ৮ লক্ষ ৫৬ হাজার ১৫৬ টাকা দেওয়া হয়। পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, সাংসদ কোটার টাকা, রাজ্য সরকারের অনুদান এবং বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাওয়া অর্থ দিয়ে ইতিমধ্যেই বীর শহীদের বাস্তুভিটা সংরক্ষণ এবং সংগ্রহশালার সংরক্ষণ সহ সংগ্রহশালা তৈরি করা হয়েছে। এখন রাসবিহারী বসুর জন্মভিটায় পর্যটন দফতর তৈরি করার জন্য আরো অর্থের প্রয়োজন। সেই বিষয়ে বড়বৈনান গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফ থেকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন