ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণের প্রতিবাদে আগামী ১৭,১৮ ডিসেম্বর দেশ জুড়ে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: কেন্দ্রের ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ বিলের বিরোধিতায় এবার গর্জে উঠল দেশের সমস্ত ব্যাঙ্ক কর্মী সংগঠন। ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও এই স্লোগান কে সামনে রেখে আগামী ১৭ এবং ১৮ ডিসেম্বর দেশ জুড়ে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেই আসতে চলেছে ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণের বিল। আর তার আগেই গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে এই বিলের বিরোধিতায় তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিল ব্যাঙ্ককর্মীরা। 

বিজ্ঞাপন
রবিবার বর্ধমান শহরে সংস্কৃতি লোকমঞ্চে একদিকে এ্যাসোসিয়েশন অফ অফিসার্স অফ পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের উদ্যোগে পঞ্চম ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল। অন্যদিকে, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইণ্ডিয়া অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশন (বেঙ্গল সার্কেল) এর উদ্যোগে বর্ধমানের টাউন হলে ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হল। ব্যাঙ্কের এই দুটি সভাতেই আওয়াজ তোলা হল ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও। এদিন দুটি সভা থেকেই এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। একইসঙ্গে যে কৃষক আন্দোলনের জেরে কেন্দ্রীয় সরকার কৃষি বিল প্রত্যাহারে বাধ্য হয়েছে সেই ধাঁচেই ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। 
এদিন দুটি ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্ক আন্দোলনের নেতৃত্বরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার একের পর এক সরকারী ক্ষেত্রগুলিকে কার্যত বিক্রি করে দিচ্ছে। ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণের মাধ্যমেও সেই একই পথ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের মানুষের সামনে বড় বিপদ আসতে চলেছে। ব্যাঙ্কে রাখা টাকার কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না। কার্যত ব্যাঙ্ক লুঠের খেলায় মেতেছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্টেট ব্যাঙ্কের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক শুভজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কার্যত দেশের দুই ধনী ব্যবসায়ীকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই কেন্দ্র সরকার এই পথ নিয়েছেন। 
তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা এব্যাপারে বৃহত্তর আন্দোলনের পথেই হাঁটছেন এবং তাঁরা কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসতে বাধ্য করবেনই। এজন্য আসন্ন কয়েকটি রাজ্যের ভোটেও তার প্রভাব ফেলবেন তাঁরা। তিনি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের এই ভূমিকাকেই তাঁরা ভোটের বাজারে তুলে ধরবেন। অন্যদিকে, গ্রামীণ ব্যাঙ্কের সম্মেলেন সৃজন কুমার পাল জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক বেসরকারীকরণের বিরুদ্ধে তাঁরা ইতিমধ্যেই জনমত গঠন করছেন। প্রয়োজনে তাঁরা গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি প্রচার করবেন। এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষকে মিলিত করেই তাঁরা বৃহত্তর লড়াইয়ে নেমেছেন। গ্রাহকদের কাছে সরাসরি পৌঁছে এই বিলের কুফল জানানো হবে। যাতে গ্রাহকরাও সঠিকভাবে জানতে বুঝতে পারেন দেশের সরকার কিভাবে সাধারণ মানুষের আমানত নিয়ে ছিনিমিনি খেলার চেষ্টায় নেমেছেন।
এদিন গ্রামীণ ব্যাঙ্কের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অল ইণ্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত, অল ইণ্ডিয়া রিজিওনাল রুরাল ব্যাঙ্ক অফিসার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৃজন কুমার পাল, অল ইণ্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক সঞ্জয় দাস, অল ইণ্ডিয়া ইউকো ব্যাঙ্ক অফিসার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৌমেন রায় চৌধুরী, গ্রামীণ ব্যাঙ্কের রাজ্য চেয়ারম্যান পার্থ প্রতীম সেন সহ অন্যান্যরা।

অন্যদিকে, স্টেট ব্যাঙ্কের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অল ইণ্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত, এসবিআইওএ-র সাধারণ সম্পাদক শুভজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়, চীফ সেক্রেটারী (রিজিওনাল সার্কেল) প্রবীর সরখেল, ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারী (বেঙ্গল সার্কেল) অরুণ কুমার রায় প্রমুখরা।

আরো পড়ুন