মন্দির মসজিদে জয়ী হওয়ার আশীর্বাদ পাচ্ছেন তৃণমূল, বিজেপি দু দলের প্রার্থীরাই! শেষমেষ কার কাজে লাগে সেটাই দেখার

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: মাঠে খেলতে নামার আগে প্রায় সব খেলোয়াড়ই নিজের নিজের ইষ্ট দেবতাকে স্মরণ করে তবেই মাঠে নামেন। সে যে খেলাই হোক না কেন। তাতে দলের হয়েই হোক বা ব্যাক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে যেন অন্তত নিজে সন্তুষ্ট হতে পারেন।

বিজ্ঞাপন
আর এখন তো রীতিমত শুরু হতে চলছে রাজনৈতিক টুর্নামেন্ট। স্বাভাবিকভাবেই এই প্রতিযোগিতায় যাঁরা অংশগ্রহণ করছেন তাঁরা অদৃষ্টের প্রতি যেন একটু বেশিই দুর্বল। কারণ অনেক প্রতিযোগীই তাঁর দলের সহ খেলোয়াড়দের একাংশের উপর নাকি ভরসা রাখতে পারছেন না। আর এই জন্যই একটু বেশি হলেও উপরওয়ালার (ঈশ্বর,আল্লা) উপরই তাঁরা ভরসা করছেন। 
বর্ধমান জেলায় জাতীয় কংগ্রেস ছাড়া ইতিমধ্যেই সব দল বিধানসভা ভোটের প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। এসিউসিআই, সংযুক্ত মোর্চা, তৃণমূল কংগ্রেসের পর সম্প্রতি বিজেপিও তাদের পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রার্থী ঘোষণা করেছে। স্বাভাবিকভাবেই ভোটের ময়দানে কেউ দুদিন আগে আর কেউ দুদিন পর শেষমেষ খেলতে নামতে চলেছে। খেলায় হার জিত আছে – এই তত্ত্ব অবশ্য সবারই জানা। তবু মন্দির, মসজিদ কে উপেক্ষা করার ভুল কেই বা করতে চায়!  আর তাই বহুজনকে ডজ করে দলের হয়ে লড়াই করার টিকিট হাসিল করার পর ভগবান-আল্লার শরণাপন্ন হওয়াটাকেই ভোটযুদ্ধের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মেনে চলছেন প্রায় সব দলের প্রার্থীরাই।

 দক্ষিণপন্থা অবলম্বনকারী দলগুলির যাঁরাই প্রার্থী হচ্ছেন কমবেশি তাঁরা প্রত্যেকেই যাচ্ছেন বিভিন্ন মন্দির,মসজিদ কিংবা পীড়স্থানে। নিজেদের জয়ের জন্য প্রার্থনা করছেন। আর যাঁরা এই ধর্মীয় স্থানে দায়িত্বে আছেন তাঁরা আশীর্বাদ করছেন সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর জয়ের জন্য! আর এই আশীর্বাদ কে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। 

তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর কমবেশি প্রায় সমস্ত তৃণমূল প্রার্থীই বিভিন্ন জায়গায় পুজো দিয়েছেন। খোদ বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলার কাছেও তাঁরা পুজো দিয়েছেন। ভোট যুদ্ধে জয়ী হওয়ার আশীর্বাদও পেয়েছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার বিজেপির প্রার্থী ঘোষণার পর সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী সন্দীপ নন্দী। 
তাঁকেও একইভাবে বিজয়ী ভব: আশীর্বাদ দিয়েছেন পুরোহিত। যেমন তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে তৃণমূল প্রার্থী খোকন দাসকেও এই একই আশীর্বাদ দিয়েছিলেন পুরোহিতরা। সর্বমঙ্গলা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত অরুণ ভট্টাচার্য দুজনকেই আশীর্বাদ করেছেন – জয়ী হবার জন্য। এখন প্রশ্ন উঠেছে, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে যাদের ভাগ্য নির্ধারণ হবার কথা – সেখানে একই ম্যাচের দুটো দলের খেলোয়ারকেই জয়ী হবার জন্য আশীর্বাদ দেওয়া কতটা বাস্তবসম্মত। তা যাইহোক, প্রার্থীরা অবশ্য এসব নিয়ে খুব বেশি ভাবনাচিন্তা করছেন না। তাঁদের অনেকেরই মত বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহু দূর। শেষমেষ আসলে এই ঐশ্বরিক আশীর্বাদ কার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দেয় সেটাই এখন দেখার।

আরো পড়ুন